Pages

فَلا رَفَثَ وَلا فُسُوقَ وَلا جِدَالَ فِي الْحَجِّ এই আয়াতে কারীমার তাফসীর

০১ : প্রশ্ন : আল্লাহ তাআলার বাণী : 

الْحَجُّ أَشْهُرٌ مَعْلُومَاتٌ فَمَنْ فَرَضَ فِيهِنَّ الْحَجَّ فَلا رَفَثَ وَلا فُسُوقَ وَلا جِدَالَ فِي الْحَجِّ 
(অর্থ- হজ্বের নির্দিষ্ট কয়েকটি মাস আছে। যে ব্যক্তি সেসব মাসে নিজের উপর হজ্ব অবধারিত করে নেয় সে হজ্বের সময় কোন যৌনাচার করবে না, কোন গুনাহ করবে না এবং ঝগড়া করবে না)। সূরা বাকারা : ১৯৭ এ আয়াতের অর্থ ও 
তাফসীর কী ?

উত্তর : সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য ।এই আয়াতে কারীমার মধ্যে আল্লাহ তাআলা হজ্জের কিছু বিধিবিধান ও আদব-আখলাক উল্লেখ করেছেন ।
 আল্লাহ তাআলা বলেন :
الْحَجُّ أَشْهُرٌ مَعْلُومَاتٌ (অর্থ- হজ্বের নির্দিষ্ট কয়েকটি মাস আছে।) এ মাসগুলো হচ্ছে-  শাওয়াল, জিলক্বদ ও জিলহজ্বের দশদিন। কোন কোন আলেমের মতে, গোটা জিলহজ্ব মাস ।
 আল্লাহ তাআলার বাণী: فَمَنْ فَرَضَ فِيهِنَّ الْحَجَّ (অর্থ- যে ব্যক্তি সেসব মাসে নিজের উপর হজ্ব অবধারিত করে নেয়)। অর্থাৎ ইহরাম বাঁধার মাধ্যমে। কারণ ইহরাম বাঁধলে হজ্জ সম্পন্ন করা অবধারিত হয়ে যায়। যেহেতু আল্লাহ তাআলা বলেছেন:
وَأَتِمُّوا الْحَجَّ وَالْعُمْرَةَ لِلَّهِ
(অর্থ- তোমরা আল্লাহর জন্য হজ্জ ও উমরা সম্পন্ন কর)[সূরা বাকারা (২): ১৯৬]
 আল্লাহ তাআলার বাণী:  ( فَلا رَفَثَ وَلا فُسُوقَ وَلا جِدَالَ فِي الْحَجِّ ) (অর্থ- সে হজ্বের সময় কোনো যৌনাচার করবে না, কোনো গুনাহ করবে না এবং ঝগড়া করবে না) অর্থাৎ কোন ব্যক্তির ইহরাম বাঁধার পর তার কর্তব্য হবে এ ইহরামের মর্যাদা রক্ষা করা। ইহরাম বিনষ্টকারী যৌনাচার, গুনার কাজ ও ঝগড়াঝাঁটি থেকে নিজেকে হেফাযত করা।
الرفث (যৌনাচার) বলা হয় সহবাসকে এবং সহবাস পূর্ব কথা ও কাজকে। যেমন- চুম্বন, কামোদ্দীপক ও যৌন আলাপচারিতা ইত্যাদি। আবার অশ্লীল ও খারাপ কথাকেও الرفث বলা হয়।
 আর الفسوق (পাপ) বলা হয় সবধরনের গুনার কাজকে। যেমন- পিতামাতার অবাধ্যতা, আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা, সুদ খাওয়া, এতিমের সম্পদ ভক্ষণ করা, গীবত করা, চোগলখোরি করা ইত্যাদি। আবার ইহরাম অবস্থায় নিষিদ্ধ কাজগুলোও ফুসুক বা পাপের অন্তর্ভুক্ত হবে।
 আর এর الجدال অর্থ হচ্ছে- ঝগড়া-বিবাদ, অন্যায় বিতর্ক। হজ্জ বা উমরার ইহরাম অবস্থায় কারো জন্য অন্যায়ভাবে বিবাদ করা জায়েয নেই। তবে সত্যকে প্রকাশ করার জন্য উত্তম পন্থায় বিতর্ক করা আল্লাহর আদেশের অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ বলেন: “ডাক তোমার প্রতিপালকের দিকে হিকমত ও ওয়াজের মাধ্যমে এবং তাদের সাথে বিতর্ক কর উত্তম পন্থায়।” [সূরা নাহল, আয়াত: ১২৫]
 এই বিষয়গুলো (অর্থাৎ অশ্লীল কথা, গুনার কাজ, অন্যায় ঝগড়া) যদিও সর্বাবস্থায় নিষিদ্ধ কিন্তু হজ্জের মধ্যে এগুলোর নিষিদ্ধতা আরও জোরদার হয়। কেননা হজ্জের উদ্দেশ্য হচ্ছে- আল্লাহর প্রতি দীনতা, হীনতা প্রকাশ করা। তাঁর আনুগত্যের মাধ্যমে নৈকট্য হাছিল করা, পাপ থেকে পবিত্র থাকা। এভাবে আদায় করলে হজ্জটি মাবরুর হজ্জ হবে। আর মাবরুর হজ্জের প্রতিদান জান্নাত ছাড়া আর কিছু নয়।
 আমরা প্রার্থনা করছি আল্লাহ আমাদেরকে তাঁর যিকির, শুকর ও উত্তম ইবাদত করার সামর্থ্য দিন।
আল্লাহই ভাল জানেন।
 দেখুন: ফাতহুল বারী (৩/৩৮২), তাফসীরে সাদী (পৃষ্ঠা-১২৫), বিন বাযের ফতোয়াসমগ্র (১৭/১৪৪)।
ইসলাম জিজ্ঞাসা ও জবাব

No comments:

Post a Comment